আজ ৬ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২১শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

ছবি: বাংলাট্রিবিউন

কোন প্রকল্পে, কোথায়, কত দুর্নীতি হয়েছে জানতে চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী


মেগা প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এটিকে অমূলক বলে আখ্যায়িত করেছেন। প্রধানমন্ত্রী জাতীয় সংসদে চালেঞ্জে ছুঁড়ে দিয়ে কোথায়, কত দুর্নীতি হয়েছে তা স্পষ্ট করতে বলছেন। স্পষ্ট করে বললে তার জবাবও তিনি দেবেন বলে উল্লেখ করেন। আজ বুধবার (১১ জানুয়ারি) জাতীয় সংসদের প্রশ্নোত্তরে গণফোরামের সংসদ সদস্য মোকাব্বির খানের এক সম্পূরক প্রশ্নে দুর্নীতির বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ দিয়ে এসব কথা বলেন।

মোকাব্বির খান তার প্রশ্নে মেগা প্রকল্প ও কুইক রেন্টালসহ বিভিন্ন খাতে দুর্নীতির অভিযোগ করেন। জবাবে মোকাব্বির খানকে উদ্দেশ্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মনে হচ্ছে আমাদের সংসদ সদস্য বিরোধী দলে শক্তিশালী হওয়ার চেষ্টা করছেন। কিন্তু যেসমস্ত অভিযোগ তিনি এনেছেন তা সম্পূর্ণ অমূলক। তিনি মেগা প্রকল্প নিয়ে কথা বলেছেন। এই মেগা প্রকল্পের সুবিধাভোগী কারা? এ দেশের সাধারণ মানুষ। এই মেগা প্রকল্প অন্য কোনো সরকার করতে পারেনি, আওয়ামী লীগ সরকারই করেছে। পদ্মা সেতু সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে আমরা করেছি। মেট্রোরেল- এটাও সাধারণ মানুষের যোগাযোগের জন্য। মেট্রো রেলে চড়ে উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত অল্পসময়ে আসতে পারছে স্বল্প খরচে। এটা সাধারণ মানুষ ভোগ করছে। মাননীয় সংসদ সদস্য অনেক অর্থশালী- সম্পদশালী, গাড়িতে চড়েন- উনার এসব সমস্যা জানার কথা নয়।’

এ সময় তিনি চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলেন, ‘মাননীয় স্পিকার আপনার মাধ্যমে মাননীয় সম্পূরক প্রশ্নকর্তাকে আমি চ্যালেঞ্জ দিচ্ছি- কোথায়, কত দুর্নীতি হয়েছে। সেই কথাটা তাকে এখানে স্পষ্ট বলতে হবে। যার জবাব আমি দেব।’

প্রধানমন্ত্রী এ সময়ে পদ্মা সেতুর দুর্নীতির অভিযোগের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, ‘ওয়ার্ল্ড ব্যাংক তো পদ্মা সেতুতে দুর্নীতির অভিযোগ এনেছিল। সেখানে কী কোন দুর্নীতি হয়েছিল? দুর্নীতি হয়নি। তারা প্রমাণ করতে পারেনি। এটা শুধু আমার কথা নয়, কানাডার ফেডারেল কোর্টের মামলার রায়েই বলা হয়েছে- সকল অভিযোগ মিথ্যা। কোনো অভিযোগ সত্য নয়, সব ভুয়া। সেক্ষেত্রে কীভাবে বললেন দুর্নীতি হচ্ছে বাংলাদেশে। দুর্নীতি যদি সত্য হতো! তাহলে এত অল্প সময়ে এসব প্রজেক্টের কাজ কী শেষ হতো? কোনো দিন হয়েছে।’

মোকাব্বির খানকে উদ্দেশ্যে করে সংসদ নেতা আরো বলেন, ‘মাননীয় সংসদ সদস্য বাংলাদেশের নাগরিক। ওনার একটা সেকেন্ড হোমও আছে। সেই সেকেন্ড হোম যেখানে অর্থ্যাৎ ইংল্যান্ডে বিদ্যুতের দাম কত শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। সেখানে বিদ্যুতের দেশ দেড়শ পার্সেন্ট বৃদ্ধি পেয়েছে। সেখানে ভোগ্যপণ্যে মূল্যস্ফীতি ১৩ দশমিক ৩ শতাংশ। সেখানে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতিটি পরিবারকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে যেন বিদ্যুৎ সাশ্রয় করা হয়। নির্দেশনা দিয়ে তা মনিটরিং করা হয়। নিয়মের ব্যত্যয় হলে জরিমানা কর করা হয়। কিন্তু বাংলাদেশে এখনো সেই অবস্থা নয়।’

সরকার দ্রুত ব্যবস্থার অংশ হিসেবে কুইক রেন্টাল এনেছিল উল্লেখ করে সরকার প্রধান বলেন, কুইক রেন্টালের কথা বলা হচ্ছে। এই কুইক রেন্টালের প্রয়োজন ছিল। কুই্ক রেন্টাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো এনেছিলাম বলেই আমরা মানুষকে বিদ্যুৎ দিতে পেরেছিলাম। এখন আমরা প্রতি ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ দিচ্ছি। কুইক রেন্টালে যদি দুর্নীতি হতো তাহলে তো এত বিদ্যুত দিতে পারার কথা ছিল না। বিএনপির আমলে বিদ্যুতে দুর্নীতি হয়েছিল বলেই বিশ্বব্যাংক টাকা বন্ধ করে দিয়েছিল। ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়কে দুর্নীতি করেছিল বলেই সেই টাকা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। আওয়ামী লীগের আমলে সেটা হয়নি। যেখানে বড় বড় মহরথিরা আমাদের দুর্নীতির খোঁজ পায়নি। সেখানে কিছু লোক ভাঙ্গা রেকর্ডের মত বলেই যাচ্ছেন- কুইক রেন্টাল, কুইক রেন্টাল। সব বিদ্যুৎ বন্ধ করে দেয়া হলে এখন!

তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার এসে যতগুলো বিদ্যুৎকেন্দ্র করেছে সেই সবগুলো যদি বন্ধ করে দিই। কী অবস্থা হবে আপনাদের? বলেন? কয়েকদিন মাত্র লোডশেডিং দিয়েছিলাম তাই চারিদিকে হাহাকার। সেই লোডশেডিং যাতে না হয় সেজন্য কুইক রেন্টাল আবার চালু রাখতে হয়েছে। নিজেরা ভোগ করবেন আর বলার সময়ে অভিযোগ করবেন। এটা মেনে নেয়া যায় না। কাজেই যারা এর পরে বেশি বলবেন তাদের বিদ্যুৎ চাওয়াটা বন্ধ করে দেব। তখন দেখি কী হয়?’

তথ্যসূত্র: দেশ রূপান্তর


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

     এই বিভাগের আরও খবর